বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
শামীম তালুকদার, সুনামগঞ্জ।।
সুনামগঞ্জের ছাতকে গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের খাগামুড়া গ্রামে গরু চুরির মামলা প্রত্যাহার না করায় বিবাদী পরিবার কতৃক বাদী পরিবারের উপর হামলা ও ধর্ষণ চেষ্টার পাল্টা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারী বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার পীরপুর বাজারের দক্ষিন পাশে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, খাগামুড়া গ্রামের মৃত. ইন্তাজ আলীর ছেলে আব্দুল মছব্বির কালা ও একই গ্রামের মৃত. কমর আলীর ছেলে লাল মিয়া গংদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে গরু চুরির ঘটনা নিয়ে মামলা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার দিন গ্রামের পশ্চিম হাটির মসজিদ থেকে আসরের নামাজ শেষে বাড়ীতে যাচ্ছিলেন আব্দুল মছব্বির কালা। এসময় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই গ্রামের লাল মিয়া, সোনাই মিয়া, আনাই মিয়া, আফতাব মিয়া, সাহেদা বেগম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন ও হাতে দা, লোহার রড, পাইপ দিয়ে বেধড়ক পিঠিয়ে আব্দুল মছব্বির কালাকে গুরতর আহত করেন। সুর চিৎকার শুনে আব্দুল মছব্বির কালার স্ত্রী রাহেনা বেগম ও ছেলে আল আমিন এগিয়ে আসলে তাদেরকে মারধর করে আহত করা হয় এবং রাহেনা বেগমের শ্লীলতাহানী ঘটায়। আহতদের তাৎক্ষনিক সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তী ও চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এেিদক গত ৩১ অক্টোবর ২০২০ ইং তারিখে আব্দুল মছব্বির কালার গোয়াল ঘর থেকে দুটি গরু চুরি হয়। এ ঘটনায় আব্দুল মছব্বির কালা বাদী হয়ে আমল গ্রহনকারী জডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, ছাতক, সুনামগঞ্জ একটি সি, আর মোকদ্দমা নং- ২৯৬/২০ ইং দায়ের করা হয়। এতে একই গ্রামের মৃত. কমর আলীর ছেলে লাল মিয়াসহ ৬জনকে আসামী করা হয়।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ লাল মিয়া এলাকায় দাগী গরু চুর হিসাবে চিহ্নিত। তার বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা নং-১৪, ১৯.১০.২০২০ ইং দঃ বিঃ ৪৫৭/৩৮০ ধারা মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গরু চুরির ঘটনায় মামলা করার কারনে লাল মিয়া ও তার বোন স্বামী পরিত্যাক্ত সাহেদা বেগম মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দমকি দিয়ে আসছিল। মামলা প্রত্যাহার না করায় একের পর এক হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাগামুড়া গ্রামের আজাদ মিয়া বলেন, আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী পরিত্যাক্ত সাহেদা বেগমের বোন স্বামী পরিত্যাক্ত মিনা বেগম আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছিল। তাদের আচার আচরন ভাল না থাকায় স্বামীর ঘরে কারো জায়গা হয় নাই।
একই গ্রামের আজাদুল ইসলাম বলেন, শুনেছি সাহেদা বেগম একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করেছে। তা সম্পুর্ণ হয়রানিমুলক। সাহেদা ও তার ভাইরা মিলে আব্দুল মছব্বির কালা ও তার স্ত্রী সন্তানকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ সেদেরগাঁও ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি মখলিছুর রহমান বলেন, সাহেদা বেগম স্বামীর সংসার ছেড়ে উমান প্রবাসে চলে যায়। সেখান থেকে ফেরার পর থেকে তার আচরন অসামাজিক হয়ে পড়ে। তার বাড়ীতে অপরিচিত বিভিন্ন মানুষের যাতায়াতের কারনে গ্রামবাসী অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন।
আব্দুল মছব্বির কালা বলেন, লাল মিয়ার বিরুদ্ধে গরু চুরির মামলা দেওয়ার কারনে সে ও তার বোন স্বামী পরিত্যাক্ত সাহেদা বেগম মামলা প্রত্যাহারের জন্য অব্যাহত হুমকি দিয়ে আসছিল। মামলা প্রত্যাহার না করায় একাধিকবার হামলা ও মিথ্যা মামলা করে হয়রানি করে আসছে।
সাহেদা বেগম পূর্ব বিরোধের জের থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, আমাকে একা পেয়ে তারা আমার ইজ্জত নষ্ট করার চেষ্টা করে। আমি থানায় মামলা করেছি।
ছাতক থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দীন মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা ধর্ষণ না। এটা একটি সংঘর্ষের ঘটনা। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।